
মৃত্যুর পর আপনি কোথায় যাবেন? জগতের ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি ভিন্নভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দেন। যেমন-
১) মাটির নিচে যাব।
২) জানি না কোথায় যাব।
৩) একমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানেন।
৪) যদি ভাল কাজ করি স্বর্গে যাব আর মন্দ কাজ করলে নরকে যাব।
৫) আমার ভাল কাজের পাল্লা যদি বেশি হয় তাহলে স্বর্গে যাব।
৬) আরে সৃষ্টিকর্তা বলে কিছু নেই। এটা নিয়ে মাথা ঘামানোরও কিছু নেই।
৭) আমি এত খারাপ কাজ করেছি যে নরক ছাড়া আমার গতি নেই।
৮) আমি যেখানেই যাই তাতে তোমার কি? তুমি নিজের রাস্তা দেখ।
৯) এই প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করা মানে সময় নষ্ট করা।
১০) আমি ভাল মানুষ, অবশ্যই স্বর্গে যাব।
মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে মানুষের বিভিন্ন ধরণের চিন্তা থাকে। যারা মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে চিন্তা করতে চাননা শেষ বয়সে তাদের মধ্যেও অনেকে চিন্তা করেন, মৃত্যুর পরে কোথায় যাব? সারাজীবন আমি যা চিন্তা করেছি তা কি আসলেই ঠিক? আসলেই কি সৃষ্টিকর্তা নেই? যদি থাকে তাহলে কি হবে?
একেকজন একেকভাবে চিন্তা করেন ঠিকই, কিন্তু কোনটা সঠিক?
কারা সঠিক? যারা বলেন সৃষ্টিকর্তা আছেন নাকি যারা বলেন সৃষ্টিকর্তা নেই? যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করেন তাদের মধ্যেও আবার ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা প্রচলিত আছে। যেমনঃ
ক) পথ অনেক, কিন্তু সবার গন্তব্য একটাই, সেটা হল স্বর্গরাজ্য।
খ) সৃষ্টিকর্তা সবাইকে এত ভালবাসেন যে কাউকে নরকে পাঠাবেন না।
গ) তুমি তোমার সর্বোচ্চ করতে থাক, সৃষ্টিকর্তা বুঝবেন। তিনি তোমার অন্তর দেখে স্বর্গে নেবেন।
ঘ) ভাল আচরণ ও ভাল কাজ করলেই স্বর্গে চলে যাব।
ঙ) স্বর্গরাজ্য শুধু সৃষ্টিকর্তার দয়ার উপর নির্ভর করে। শুধু তিনি চাইলেই একজন স্বর্গে যেতে পারবে কিন্তু কেউ এর নিশ্চয়তা দিতে পারবে না, ইত্যাদি।
সত্য কোনটা? কিভাবেই বা বুঝব যে সেটা সত্য?
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি সৃষ্টিকর্তা আছেন এবং একমাত্র তিনিই আমাদের তাঁর রাজ্যে নিতে পারেন। কিন্তু কোন সৃষ্টিকর্তা সত্য এবং কোন সৃষ্টিকর্তা মিথ্যা?
একটি আসল টাকার পেছনে যেমন অনেক নকল টাকা তৈরি হতে পারে তেমনই একটি আসল পথের বিপরীতে অনেক নকল পথ থাকতে পারে। আমি নকল পথকে যতই বিশ্বাস করি না কেন, নকল পথ আমাকে ভুলদিকেই নিয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস যত খাঁটিই হোক না কেন, নকল পথে খাঁটি বিশ্বাস আমাকে স্বর্গে নিতে পারবে না। নকল টাকাকে আসল টাকা বললেই যেমন তা আসল হয়ে যায় না, তেমনই নকল পথকে আসল পথ বললেই তা আসল বা সত্য পথ হয়ে যায় না।
অধিকাংশ ধর্মশিক্ষায় বলা হয় যে সৃষ্টিকর্তাকে পরীক্ষা করা নিষেধ। যিনি প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা, তিনি কি আমাদের তাই বলেন? তিনি কি পরীক্ষার জন্য ভয় পান? আজ আমরা সৃষ্টিকর্তাকে পরীক্ষা করে দেখব এবং শেষে প্রকাশ করব যে তাঁকে পরীক্ষা করা উচিৎ কি অনুচিত।
সৃষ্টিকর্তা হওয়ার মানদণ্ডঃ
আমার ব্যক্তিগত চিন্তা হলঃ যদি একজন প্রকৃত, দয়াময় এবং ভালোবাসার সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করতে হয় তাহলে তাঁর কতগুলো মানদণ্ড থাকা আবশ্যক (যদিও এটা মূল্যায়নের যোগ্যতা আমি রাখি না)। মানদণ্ডের কিছু উদাহরণঃ
১) সৃষ্টিকর্তাকে জীবন্ত হতে হবে। যে সৃষ্টিকর্তা জীবন্ত নয় তাকে বিশ্বাস করা মানে সময় নষ্ট করা।
২) সৃষ্টিকর্তার চরিত্র সর্বোচ্চ হতে হবে। চরিত্র ভাল নয় এমন দেবতা(মন্দ আত্মা) থাকতে পারে, কিন্তু সেই দেবতা হল নকল সৃষ্টিকর্তা বা মন্দ দেবতা। মন্দ আত্মারা নিজেদেরকে সর্বোচ্চ দেবতা হিসেবে প্রকাশ করতে চায়, তারা মানুষকে ভাল কিছুর প্রলোভন দেখিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়। মন্দ আত্মা কখনও সম্মানীয় চরিত্রের নয়।
৩) সৃষ্টিকর্তার ভালবাসার প্রকাশ সর্বোচ্চ হতে হবে। একজন মানুষই যদি সৃষ্টিকর্তার চেয়ে বেশি ভালবাসা দেখাতে পারে তাহলে সেই সৃষ্টিকর্তা উপযুক্ত সৃষ্টিকর্তা হবেন কিভাবে?
আপনি যাকে সৃষ্টিকর্তা মানেন তিনি কি উপরের সমস্ত মানদণ্ড পূর্ণ করেন? যদি পূর্ণ করে থাকেন, তাহলে সম্ভাবনা আছে যে আপনি সঠিক পথে হাটছেন। এই লেখার শেষে আমি আরও কয়েকটি মানদণ্ড প্রকাশ করব যেন আপনি নিজের সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন।
একজন পালক(ফাদার) এবং যুবকের কথোপকথনের মধ্য দিয়ে আমরা আসল সৃষ্টিকর্তার দয়া বোঝার চেষ্টা করব। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমার সাথে এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করার জন্য। আমি যা প্রকাশ করব তা আপনাকে গ্রহণ করতেই হবে এমন নয়। আপনি যদি চান তাহলে এখনই এই লেখা পড়া থামাতে পারেন, কারণ এই লেখা আপনার পুরাতন বিশ্বাসের উপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মন্দ শক্তি কখনও আপনার মঙ্গল চাইবে না এবং সত্য জানাতে চাইবে না। আমি যে সত্য জানি আপনিও যদি তা জানতে চান তাহলে পুরোটা পড়তে পারেন, যদি জানতে না চান সমস্যা নেই, আমি আপনার সিদ্ধান্তকে সম্মান করি।
ধন্যবাদঃ
স্বর্গের বিষয় নিয়ে একজন পালক এবং যুবকের মধ্যে কথোপকথন।
যুবকঃ পালকবাবু, শুভ সন্ধ্যা। কেমন আছেন?
পালকঃ ভাল আছি। তুমি কেমন?
যুবকঃ আমিও ভাল, তবে একটা বিষয় নিয়ে একটু চিন্তায় আছি। ছোটবেলা থেকে ঈশ্বর এবং স্বর্গ সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি এবং পড়েছি, অথচ এখনও অন্তরে সন্দেহ কাজ করে। পরিবারে, মণ্ডলীতে প্রশ্ন করলে লোকেরা অভিযোগ করে, ওরা বলে যে আমার বিশ্বাস নাকি দুর্বল। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নাকি প্রশ্ন করা উচিৎ নয়। শুনেছি প্রশ্ন করলে আপনি এরকম অভিযোগ করেন না, তাই আপনার কাছে আসলাম।
পালকঃ তুমি কি জানতে চাও বল। আমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
যুবকঃ স্বর্গের সুসমাচারটা দয়া করে ভালভাবে বুঝিয়ে দিবেন? তা নাহলে আমি একদিন নাস্তিক হয়ে যেতে পারি।
পালকঃ তুমি যদি এই মূহূর্তে মারা যাও তাহলে কোথায় যাবে? স্বর্গে নাকি নরকে?
যুবকঃ এটা কেমন প্রশ্ন করলেন আপনি? আমার জীবনে ভাল কাজের পরিমাণ যদি মন্দ কাজের চেয়ে বেশি হয় তাহলে স্বর্গে যাব, কারণ ভাল কাজ আমার খারাপ কাজকে মুছে দিবে।
পালকঃ আচ্ছা! আমি এখন কিছু কথা বলব, মনোযোগ দিয়ে শোন এবং উত্তর দাও। আদালতে যখন কারও বিচার হয়, তখন কি লোকের মন্দ কাজের বিচার করা হয় নাকি ভাল কাজের?
যুবকঃ অবশ্যই মন্দ কাজের বিচার হয়। ভাল কাজের জন্য তো মানুষকে আদালতে নেওয়া হয় না।
পালকঃ তুমি যখন সৃষ্টিকর্তার সামনে দাঁড়াবে, তখন তিনি হলেন বিচারক। ন্যায্য বিচারক হিসাবে তিনি তোমার মন্দ কাজের বিচার করবেন নাকি ভাল কাজের?
যুবকঃ মন্দ কাজের।
পালকঃ ঠিক বলেছ। যদি তিনি তোমার ভাল কাজের জন্য মন্দ কাজ বাতিল করে দেন তাহলে তিনি অবশ্যই ন্যায্য বিচারক নন। যে ঈশ্বর ভাল কাজের জন্য মন্দ কাজ বাতিল করে দেয় সেই ঈশ্বর কখনও ন্যায্য ঈশ্বর হতে পারে না। বাইবেলের ঈশ্বর যদি ভাল কাজের জন্য মন্দ কাজের ফল এমনিই বাদ দিয়ে দেন তাহলে তাঁকে আমি ভাল ঈশ্বর বলব না।
মনে কর দশ বছর আগে তুমি দশ হাজার টাকা চুরি করেছিলে। তোমার চুরি মানুষের কাছে ধরাও পড়েনি আর তুমি কোন জরিমানাও দাওনি। পরে সেই চুরির টাকা ব্যবহার তুমি ধনী হলে এবং মানুষদের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা দান করলে, দান করা ভালো কাজ। কিন্তু তুমি যতই দান কর না কেন, সেই দানের কারণে তোমার চুরির শাস্তি মওকুফ হবে না। যখন ধরা পড়বে এবং বিচার হবে তখন তোমার চুরির বিচার হবে, দানের বিচার হবে না। যদি কোন বিচারক দানের কারণে চুরির শাস্তি মাফ করে দেন তাহলে তিনি ন্যায্য বিচারক নন। আমাদের সৃষ্টিকর্তা যেহেতু ন্যায্য বিচারক, তাই তাই তিনি ভাল কাজের জন্য মন্দ কাজের শাস্তি মওকুফ করবেন না। ভাল কাজের জন্য তিনি পুরস্কার দিবেন ঠিকই, কিন্তু মন্দ কাজের জন্য অপরাধীকে জরিমানাও দিতে হবে।
যুবকঃ এখন বুঝতে পারছি, ভাল কাজ দিয়ে মন্দ কাজ বাতিল হবে এবং আমি স্বর্গে যাব, এই চিন্তা আসলে ভুল চিন্তা, এটা অন্যায্যতার চিন্তা যেটা শয়তান শেখায়।
পালকঃ এখানেই শেষ নয়। সৃষ্টিকর্তা খাঁটি এবং পবিত্র, তাঁর মধ্যে মন্দ কিছু নেই। তাই সামান্য মন্দতা নিয়েও তুমি তাঁর রাজ্যে স্থান পাবে না। অর্থাৎ তুমি যদি পাপ কর তাহলে এর শাস্তি কি হবে?
যুবকঃ মৃত্যু। পাপের বেতন মৃত্যু। পাপ করলে স্বর্গে স্থান নেই। কিন্তু সব মানুষই তো পাপ করেছে। শুদ্ধতার বিচার হলেতো সবাই তাহলে নরকে যাবে। মিথ্যা বললেও আমি নরকে যাব, খুন করলেও আমি নরকে যাব।
পালকঃ ঠিক, শুদ্ধতার বিচারের কারণে সবাই নরকে যাবে। ঈশ্বরের বিচার এটাই, সবাই যেহেতু পাপ করেছে তাই কেউ স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য নয়। পাপের কারণে সবাই নরকে যাবে।
যুবকঃ তাহলে উপায় কি?
পালকঃ উপায় আছে। মনে কর তুমি দশ হাজার টাকা চুরি করেছিলে, এর জরিমানা হল বিশ হাজার টাকা। তোমাকে জেলে ঢোকানো হল কারণ তুমি জরিমানা দাওনি। তোমার কাছে জরিমানা দেয়ার টাকা নেই কারণ মন্দ কাজের জন্য তোমার সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে গেছে, আর কখনও তুমি এই জরিমানার টাকা দিতে পারবে না। বিচারে রায় হল যতক্ষণ তুমি জরিমানা না দিবে ততক্ষণ তোমার মুক্তি নেই। অর্থাৎ তুমি জীবনেও মুক্তি পাচ্ছ না কারণ জরিমানা দিতে পারবে না। কিন্তু তোমার বাবার সেই জরিমানা দেয়ার সামর্থ্য আছে, তিনি তোমার হয়ে জরিমানা দিয়ে দিলেন আর তুমি বাবার দয়ায় মুক্তি পেয়ে গেলে। এখানে বাবা ক্ষমতা দেখিয়ে তোমাকে জেল থেকে বের করেননি বরং ন্যায্যতার পথে বের করলেন। এই মুক্তিতে কি তোমার কোন কাজ করতে হয়েছে?
যুবকঃ না। আমি বাবার দয়ায় মুক্তি পাচ্ছি। কিন্তু এরপরেও আমি স্বর্গের হিসাব মিলাতে পারছি না।
পালকঃ তোমার বাবা তোমাকে ভালবাসেন, তাই তিনি তোমার হয়ে জরিমানা দিলেন। তোমাকে তার দয়া গ্রহণ ছাড়া আর কিছু করতে হয়নি। মানুষ পাপ করেছে, এই পাপের মূল্য বা জরিমানা অসীম। এটা শোধ করার ক্ষমতা মানুষের নেই। পাপের ফলাফল হিসেবে প্রত্যেকে নরক নামের জেলে যাবে যেখানে শয়তান রাজত্ব করে। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের পিতা, তিনি আমাদের এত ভালবাসেন যে নিজে সেই অসীম জরিমানা দিতে ইচ্ছুক। পাপের অসীম জরিমানা আমরা শোধ করতে পারি না কিন্তু ঈশ্বর পারেন। ঈশ্বর মানুষকে এত ভালবাসলেন যে নিজের একমাত্র পুত্র যীশু খ্রিষ্টকে আমাদের অসীম মূল্য বা জরিমানা পরিশোধের জন্য জগতে পাঠালেন। আমাদের জরিমানা অসীম, যীশুর রক্তের মূল্যও অসীম। যীশুর মধ্য দিয়ে নরকের মত জেলখানার জরিমানা পরিশোধ হয়ে যায়। তাই যারা পাপের মুক্তি পেয়ে স্বর্গে যেতে চায়, তাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে এবং যীশু খ্রিষ্টকে হৃদয়ে গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই সে পাপ থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গে যেতে পারবে। যীশুই একমাত্র পথ, কারণ তাঁকেই পাপের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। আর মানুষের কাজ দ্বারা এই পরিত্রাণ সম্ভব নয়।
ইফি ২:৮-৯- ঈশ্বরের দয়ায় বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তোমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছ। এটা তোমাদের নিজেদের দ্বারা হয় নি, তা ঈশ্বরেরই দান। এটা কাজের ফল হিসাবে দেওয়া হয় নি, যেন কেউ গর্ব করতে না পারে।
বাইবেলে পরিষ্কার উল্লেখ আছে যে কাজ (ভাল বা খারাপ কাজ) দ্বারা পাপের পরিত্রাণ সম্ভব নয়। বাইবেলের অপরিষ্কার কোন বাক্য দিয়ে এরকম পরিষ্কার বাক্যের ব্যাখ্যা উল্টে ফেলা উচিৎ নয়। যীশু আমাদের পাপের জন্য ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন, তৃতীয় দিন পুনরুত্থিত হলেন এবং মৃত্যুর উপর জয়লাভ করলেন। এইভাবে তাঁর কাছে শয়তান ও মৃত্যু পরাজিত হল।
যুবকঃ এখন আগের চেয়ে পরিষ্কার হয়েছে, কিন্তু তারপরেও কেন যেন মেনে নিতে পারছিনা। আরেকটু সাহায্য করবেন? যীশু একজন মানুষ। তার রক্ত কিভাবে আমাদের মুক্ত করে?
পালকঃ “যীশু একজন মানুষ,” এই বাক্যটা আংশিক ঠিক। তুমি অন্য দর্শনের প্রভাবের কারণে এমন চিন্তা করছ। আসলে প্রভু যীশু প্রথমে ঈশ্বর, তিনি অসীম। কিন্তু মানুষকে উদ্ধারের জন্য তিনি নিজের ঈশ্বরত্ব ছেড়ে এই জগতে আসলেন এবং মানুষের মুক্তির জন্য জীবন দিলেন। অর্থাৎ মানুষ হিসাবে প্রভু যীশু কখনও ঈশ্বর হননি, কারণ মানুষ কখনও সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হতে পারে না। যীশু প্রথমত মানুষ নন, তিনি হলেন ঈশ্বর যিনি মানুষ হয়ে জগতে এসেছিলেন এবং নিজের জীবন দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মানুষ অবস্থাতেও তিনি ঈশ্বর ছিলেন কিন্তু নিজের শক্তিকে শুণ্য করে মানুষের মত হয়েছিলেন, তাই আমরা তাকে ১০০ ভাগ ঈশ্বর ও ১০০ ভাগ মানুষ বলি। ঈশ্বর হিসেবে এখানেও প্রভু যীশুর নম্রতা দেখা যায়। আর কোন ঈশ্বর এরকম নম্র হয়ে মানুষের কাছে আসেন না, ওরা অহংকারী।
এই ছবিটা দেখ।

দাড়িপাল্লার একদিকে যীশু (যিনি অসীম) আর অন্যদিকে জগতের পাপী মানুষ। যারা যারা প্রভু যীশুকে গ্রহণ করে এই দাঁড়িপাল্লায় উঠে তাদের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যায়। আর যারা উঠতে চায়না তারা ঈশ্বরের দয়া গ্রহণ করতে রাজি নয়, তাই তারা ধ্বংস হবে। যীশু খ্রিষ্ট খাঁটি এবং পবিত্র ঈশ্বর, তাঁর রক্তের মূল্য এত বেশি যে জগতের সব পাপী মানুষ যীশুর বিপরীতে উঠলেও যীশুর পাল্লা ভারী থাকবে। তাই যীশুর রক্ত দ্বারা পাপের অসীম জরিমানা পরিশোধ হয়ে গেছে। যারা এই সুসমাচার শোনার পরেও এই দাঁড়িপাল্লায় উঠতে রাজি নয় ওরা নিশ্চিত নরকে যাবে।
যুবকঃ এখন আমি বুঝতে পারছি। কিন্তু ঈশ্বর যেভাবে স্বর্গে ঢুকাচ্ছেন, এটা কি ঠিক হচ্ছে?
পালকঃ তুমি চিন্তা করে দেখ, একজন আদর্শ জাগতিক বাবা তার শিশু সন্তানকে অনেক ভালবাসেন। যদি সন্তান নোংরা হয়ে ঘরে ফেরে, বাবা কি তাকে ঘর থেকে বের করে দেন নাকি প্রথমে ঘরে ঢোকান, পরিষ্কার করেন এবং পরে শাসন করেন?
যুবকঃ আগে ঘরে ঢুকান, পরিষ্কার করেন এবং পরে শাসন করে। বাবা যেহেতু নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসেন, তাই তিনি তাড়ান না।
পালকঃ ঠিক একইভাবে সব মানুষকে ঈশ্বর সন্তান হিসেবে স্বর্গে দেখতে চান। তাই তিনি যীশুর মধ্য দিয়ে জরিমানা দিয়ে প্রথমে সব মানুষের স্বর্গের পথ পরিষ্কার করেন, পরে শাসন করেন। আদর্শ পিতা হিসাবে আগে ঈশ্বর দয়া করে স্বর্গে প্রবেশের নিশ্চয়তা দেন এবং এরপরে সংশোধন করেন। এটা বাইবেলেও দেখা যায়।
- ঈশ্বর আদম হবাকে বাগান থেকে তাড়ানোর আগেই উদ্ধারের পরিকল্পনা করেন, পরে ওদের মঙ্গলের জন্য তাড়িয়ে দেন।
- ইস্রায়েল জাতিকে ঈশ্বর প্রথমে মিশর থেকে উদ্ধার করেন, পরে আইনকানুন দেন। দুই ক্ষেত্রেই আগে উদ্ধার পরে শাসন।
- যীশুও একইভাবে প্রথমে আমাদের উদ্ধার করেন এবং স্বর্গে ঢোকান, এরপর কৃতজ্ঞতার সাথে ভাল কাজ করতে বলেন।
আপন বাবার ঘরে ফেরার জন্য নিয়ম মানা লাগে না, কিন্তু ঘরে ঢোকার পরে সন্তান হিসেবে নিয়ম মানা প্রয়োজন। তাই যীশুকে গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আমি স্বর্গে প্রবেশের নিশ্চয়তা পেয়েছি, এখন স্বর্গের নাগরিক হিসেবে আমি নৈতিক আইন পালন করি। স্বর্গে ঢোকার জন্য ভাল কাজ বা আইন পালন করি না।
যুবকঃ কিন্তু এমনি এমনি উদ্ধার পেলেতো মানুষ পাপ করতেই থাকবে। লোকেরা বলবে যে যীশু উদ্ধার করেছেন, আর কোন চিন্তা নেই, এখন আমরা ইচ্ছামত পাপ করতে পারি।
পালকঃ অনেকেই এরকম বলে। যারা যীশুকে গ্রহণ করেছে তারা সবাই ঈশ্বরের সন্তান, কিন্তু সবাই যীশুর শিষ্য নয়। সন্তান এবং শিষ্যের মধ্যে পার্থক্য আছে। একজন তার বাবার সন্তান হতে পারে কিন্তু শিষ্য নাও হতে পারে। যীশুর মধ্য দিয়ে আমরা ঈশ্বরের সন্তান হয়ে স্বর্গে প্রবেশ করি, তবে ঈশ্বরের সন্তান হয়েছি মানে এই না যে যীশুর শিষ্য হয়ে গেছি। বিনামূল্যে ঈশ্বরের সন্তান হওয়া যায়, কিন্তু বিনামূল্যে যীশুর শিষ্য হওয়া যায় না। যারা বলে যীশুকে গ্রহণ করেছি তাই এখন পাপ করা যাবে, তারা এখনও সুসমাচার বুঝেই নি। যীশু পাপের জীবন ত্যাগ করার দাবী করেন। তিনি বিশ্বাসীর জীবনে ভাল ফল দাবী করেন, পাপ ত্যাগ করতে বলেন। পাপ করতে পারব এই চিন্তা ঈশ্বর থেকে আসে না বরং শয়তান থেকে আসে। শয়তান নিজের ভুল চিন্তাকে প্রমাণ করার জন্য বাইবেল থেকে পছন্দের বাক্য বেছে নেয় আর অপছন্দের বাক্যগুলো ফেলে দিয়ে পাপ করতে বলে। অনেকে শয়তানের মতই বাইবেল থেকে অনুতাপের বাক্যগুলো বাদ দেয় আর বলে, “এখন ইচ্ছামত পাপ করতে পারব।” ওরা আসলে ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলে না বরং শয়তান অথবা নিজের স্বার্থপর চিন্তায় চলে।
পাপ করতে পারবে এই চিন্তায় যদি কেউ যীশুকে গ্রহণ করে থাকে, তাহলে সে সত্য যীশুকে গ্রহণ করেছে নাকি নিজের ইচ্ছামত চলার জন্য অন্য কোন নকল যীশুকে গ্রহণ করেছে তা চিন্তা করা দরকার। নকল যীশু কাউকে পরিত্রাণ দেবে না। কেউ যদি যীশুকে গ্রহণ করে তাহলে তার হৃদয় রুপান্তর হতে বাধ্য, তাৎক্ষনিক রুপান্তর না হলেও ধীরে ধীরে রুপান্তর। বাইবেলের ঈশ্বর রুপান্তর দাবী করেন।
যুবকঃ যারা যীশুর মধ্য দিয়ে পাপের সমর্থন করে তারা কি তাহলে ভুল শিক্ষা দিচ্ছে?
পালকঃ হ্যা। তারা ভুল শিক্ষা দিচ্ছে। যীশু বলেন পাপ ছাড়তে, মিথ্যা না বলতে। আর ওরা বলে মাঝে মাঝে মিথ্যা বলা যায়, জীবন বাঁচানোর জন্য মিথ্যা বললে সমস্যা নেই। সত্য ঈশ্বর যদি মিথ্যা সমর্থন করেন তাহলে সেই ঈশ্বরের মধ্যে আদর্শগত সমস্যা আছে। বাইবেলের ঈশ্বর এমন নন।
পাপের ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, তুমি যদি মাতাল হও এবং ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাও, ঈশ্বর ক্ষমা করবেন। কিন্তু তোমার লিভার তোমাকে ক্ষমা করবে না। যদি চুরি কর, মিথ্যা বল এবং ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাও, ঈশ্বর ক্ষমা করবেন। কিন্তু তোমার কর্মফল হিসাবে চেনা লোক তোমাকে বিশ্বাস করবে না এবং অনেকে ক্ষমা করবে না। তুমি যদি মাতাল হয়ে বউ পেটাও এবং ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাও, ঈশ্বর ক্ষমা করবেন কিন্তু পরিবারে শান্তি আসবে না। অর্থাৎ পাপের কর্মফল এই পৃথিবীতে অবশ্যই আছে আর পৃথিবীর এই ফল যীশু গ্রহণ করবেন না। মাঝে মাঝে মানুষের নম্রতা এবং ঈশ্বরের দয়ার কারণে কেউ কেউ এই খারাপ ফল থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি পারে না। তাই তুমি যদি নিজের এবং পরিবারের জন্য জগতের খারাপ প্রতিফল চাও, যদি চাও যে মন্দ আত্মার শক্তি তোমাদের জীবনকে রাজত্ব করবে তাহলে পাপ করতে পার, কিন্তু বাইবেলের ঈশ্বর এর সমর্থন করেন না। ঈশ্বর চান আমরা যেন তাঁর সন্তান হই এবং স্বর্গরাজ্যের সৈনিক হই। আমরা ঈশ্বরের সন্তান হয়ে নরকের সৈনিক হব এটা ঈশ্বর চান না।
যুবকঃ কিন্তু আরও অন্য পথেও তো স্বর্গে যাওয়া যেতে পারে। যীশুই একমাত্র পথ কেন? একটা স্থানে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন রাস্তা থাকতে পারে না?
পালকঃ অবশ্যই একটা জায়গায় যাওয়ার জন্য বিভিন্ন পথ থাকতে পারে যদি পথ তৈরি করা হয়। কিন্তু স্বর্গে যাওয়ার জন্য ঈশ্বর আর কোন পথ তৈরি করেননি। স্বর্গে যাওয়ার একটা পথ তিনি দেখিয়েছেন। আর যীশুই সেই একমাত্র পথ। শয়তান আমাদের ভুল পথে নেওয়ার জন্য মাথায় চিন্তা দেয় যে আরও পথ আছে। নিচের ছবিটা একটু দেখ-

এই জগতের লোকেরা পাপে ডুবে যাচ্ছে। ঈশ্বর পাপীকে উদ্ধারের জন্য তাঁর দয়া যীশুকে লাইফ রিঙ হিসেবে পাঠিয়েছেন। ছবির লোকটা জাহাজের ক্যাপ্টেনের দয়ার দান কমলা সাদা লাইফ রিংটা গ্রহণ না করে যদি বলে, “এই রঙ চাই না আমি, আমার সবুজ রঙের লাইফ রিঙ চাই। আমার জন্য সবুজ একটা ছুড়ে মার”। তাহলে আমি তাকে মানসিক রোগী, বোকা অথবা অহংকারী ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারি না। এইভাবে মৃতপ্রায় লোকটা ক্যাপ্টেনকে অসম্মান করছে। আমরাও ঈশ্বরকে অসম্মান করি যখন তাঁর দেখানো একমাত্র পথ যীশুকে গ্রহণ না করি।
শয়তান এই আসল রিঙের চারপাশে আরও অন্যরকম রিঙ ভাসিয়ে প্রলোভিত করে বলতে পারে যে এটা দিয়েও স্বর্গে/জাহাজে উঠা যাবে। অথচ সেই রিঙের সাথে স্বর্গে বা আসল জাহাজে উঠার কোন সম্পর্ক নেই। তাই যীশু ছাড়া অন্য কোন পথে গেলে মানুষ সাময়িকভাবে ভাল অনুভুতি পেতে পারে। কিন্তু সেই পথ কখনও তাকে মূল গন্তব্য স্বর্গের ভেতরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে না। এই কারণে যীশু বলেন যে স্বর্গের পথ সরু কিন্তু ধ্বংসের পথ প্রশস্ত, আর ধ্বংসের পথ খুঁজে পাওয়া সহজ। অনেকে স্বর্গের অনেক পথ দেখাতে পারে কিন্তু সেগুলো নকল পথ।
তেলকে পানি বললে তেল যেমন পানি হয়ে যায় না, তেমনই নকল পথকে আসল পথ বললে তা কখনও আসল পথ হয়ে যায় না। তোমার কোন বন্ধু যদি স্বর্গের বিভিন্ন পথে বিশ্বাস করে, তুমি পরামর্শ দিও সে যেন নিজের বিশ্বাসকে নিরপেক্ষভাবে পরীক্ষা করে দেখে। সে হয়তো না জেনেই নকল পথে খাঁটি বিশ্বাস নিয়ে হাটছে এবং ধ্বংসের পথে পা বাড়াচ্ছে। ভুল পথে খাঁটি বিশ্বাস শুধু শয়তানকেই সাহায্য করে।
যুবকঃ ধন্যবাদ। আমি এখন আগের চেয়ে অনেক পরিষ্কার হয়েছি। সারাজীবন যা বুঝিনি, আপনার সাথে কথা বলে তা পরিষ্কার হয়ে গেছে।
পালকঃ তুমি কি এখন বলতে পারবে, মৃত্যুর পর তোমার শেষ গন্তব্য কোথায় হবে?
যুবকঃ যেহেতু আমি যীশুকে মুক্তিদাতা হিসাবে গ্রহণ করেছি তাই আমি নিশ্চিত যে শেষে স্বর্গেই যাব। আমার ঈশ্বর আগে স্বর্গের নিশ্চয়তা দেন। শয়তানের মত স্বর্গের বিষয় নিয়ে তিনি অনিশ্চয়তায় রাখেন না। শয়তান অনিশ্চয়তায় রাখে, এমনকি ঈশ্বরের বাক্য ব্যবহার করেও সে আমাদের অনিশ্চয়তায় ফেলতে চেষ্টা করে। আপনাকে ধন্যবাদ যীশুর সুসমাচার সম্পূর্ণ বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।
এখন পাঠকঃ আপনার জন্য কঠিন প্রশ্নঃ
আপনি যে সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করেন তিনি কি সত্য ঈশ্বর? আপনি কি পরীক্ষা করে দেখেছেন নাকি শৈশবকাল থেকে শোনা কথায় বিশ্বাস করেছেন?
- আমার ৯ বছরের খারাপ ভিডিও দেখার নেশা ছিল যা নিজের চেষ্টায় দূর করতে পারিনি। যীশুর দয়ায় তা এক ঘণ্টারও কম সময়ে দূর হয়ে গিয়েছে, কোন মানুষের সাহায্য প্রয়োজন হয়নি।
- আমার ১৩ বছরের আরেকটি নেশা ছিল যা যীশুর নামে ৫ মিনিটের প্রার্থনায় সম্পূর্ণ দূর হয়ে যায়। এক্ষেত্রে প্রথমত ঈশ্বরের হাত, দ্বিতীয়ত একজন মানুষ(আমার মেন্টরের) প্রার্থনা ছিল।
যীশুর নামে সুস্থতা থেকে শুরু করে মন্দ আত্মা দূর করা আমি দেখেছি এবং নিজেও দূর করেছি(আমার শক্তিতে নয়)। আমি প্রমাণ পেয়েছি যে যীশু এখনও জীবন্ত। আমাদের ঈশ্বরকে উপযুক্তভাবে পরীক্ষা করা যায়। অনুপযুক্তভাবে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করা নিষেধ। বাইবেলে শয়তান এবং ইস্রায়েল জাতি অনুপযুক্তভাবে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিল যা করা নিষেধ। আবার কিছু ক্ষেত্রে ঈশ্বর নিজেই তাঁকে পরীক্ষা করতে বলেছেন, বাইবেলে গিদিয়োন পর্যন্ত ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলেন। ঈশ্বরকে উপযুক্ত পরীক্ষা করার মধ্য দিয়েও বুঝা যায় যে বাইবেলের ঈশ্বর জীবন্ত। অনুপযুক্ত পরীক্ষা করলে ঈশ্বর উত্তর নাও দিতে পারেন। তবে একজন ঈশ্বর জীবন্ত হলেই যে তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে এমন নয়। নিচের গুণগুলোও সেই ঈশ্বরের মধ্যে থাকতে হবে।
আদর্শ/মঙ্গলময় ঈশ্বরের মানদণ্ডঃ
“ঈশ্বরের এরকম হতে হবে, সেইরকম হতে হবে”; এমন কথা বলার কোন যোগ্যতা আমার নেই। একমাত্র ঈশ্বরেরই যোগ্যতা আছে, তিনিই আমাদের বলতে পারেন যে, “তোমাদের এমন হতে হবে।” আমার যোগ্যতার কারণে আমি এখন নিচের কথাগুলো তুলে ধরছিনা। আমি অযোগ্য হলেও বাইবেলের ঈশ্বরের মহানতা তুলে ধরতে চাই। শুধু বাইবেলের ঈশ্বরের মহানতা প্রকাশ করার জন্যই সত্য ঈশ্বরের মানদণ্ডগুলো তুলে ধরছি।
১) ঈশ্বরের জীবন্ত হতে হবে। যে ঈশ্বর জীবন্ত নয় তাকে বিশ্বাস করা মানে সময় নষ্ট করা। বাইবেলের ঈশ্বর আদিতে ছিলেন, এখনও আছেন, ভবিষ্যতেও থাকবেন।
২) সৃষ্টিকর্তার চরিত্র সর্বোচ্চ হতে হবে। চরিত্র ভাল নয় এমন দেবতা থাকতে পারে, সেই দেবতা হল নকল সৃষ্টিকর্তা বা মন্দ দেবতা। মন্দ আত্মারা নিজেদের দেবতা হিসেবে প্রকাশ করতে চায়, তারা মানুষকে ভাল কিছুর প্রলোভন দেখিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়। বাইবেলের ঈশ্বরের চরিত্র সর্বোচ্চ। অন্য দেবতারা মিথ্যা কথা, চুরি, ব্যাভিচার ইত্যাদি সমর্থন করলেও বাইবেলের ঈশ্বর সমর্থন করেন না।
৩) ঈশ্বরের ভালবাসার প্রকাশ সর্বোচ্চ হতে হবে। একজন মানুষই যদি ঈশ্বরের চেয়ে বেশি ভালবাসা দেখাতে পারে তাহলে সেই ঈশ্বর উপযুক্ত ঈশ্বর হবেন কিভাবে? বাইবেলের ঈশ্বর মানুষের পরিত্রাণের জন্য নিজে জীবন দিয়েছেন। অন্য কোন দেবতা এটা করেনি। অন্য দেবতাদের চেয়ে জাগতিক মাবাবাই বেশি ভালবাসা দেখাতে পারেন।
৪) আদর্শ ঈশ্বরকে সকলের সাথে ন্যায্য হতে হবে এমনকি শয়তানের সাথেও। বাইবেলের ঈশ্বর শয়তানের সাথেও এমন ন্যায্য যা অন্য কোন দেবতার মধ্যে আমি দেখিনি। কিছু দেবতা ক্ষমতা ব্যবহার করে স্বর্গে নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না, অনেকে স্বর্গের নিশ্চয়তাও দেয় না। বাইবেলের ঈশ্বর ক্ষমতা ব্যবহারের আগে ন্যায্যতা দেখান, তিনি জরিমানা দিয়ে নিজের সন্তানদের স্বর্গে ঢোকান, ক্ষমতার জোরে স্বর্গে নেন না। অন্য কোন দেবতা মানুষকে উদ্ধারের জন্য নিজের জীবন ত্যাগ স্বীকার করার মত আদর্শ দেখায় না, তাই তারা কখনও সর্বোচ্চ ভালোবাসার ঈশ্বর হতেই পারে না। বাইবেলের ঈশ্বর জরিমানা দিয়ে শয়তানের অধিকার/নরক থেকে নিজের সন্তানদের উদ্ধার করেন, তাই তিনি শয়তানের সাথেও ন্যায্য।
৫) সত্য ঈশ্বর নিজে যা করেন তা অন্যকে করতে বলেন। বাইবেলের ঈশ্বর ত্রিত্বে একতায় থাকেন মানুষকেও একতায় থাকতে বলেন, নিজে দাসত্ব করেন এবং আমাদেরও একে অন্যের দাসত্ব করতে বলেন, তিনি নিজেকে উৎসর্গ দেন এবং আমাদেরও নিজেদেরকে জীবন্ত উৎসর্গ করতে বলেন। বাইবেলের ঈশ্বর নিজে সেবা করেন এবং আমাদেরও সেবা করতে বলেন। নিজে চুরি করেন না, মিথ্যা বলেন না, ব্যাভিচার করেন না এবং আমাদের জন্যও তা নিষেধ করেন। অন্য কোন দেবতার মধ্যে আমি এইরকম গুণাবলী পাইনি।
৬) আদর্শ পিতা হিসাবে মানুষের সাথে ঈশ্বরকে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে। আদর্শ এবং প্রেমময় পিতা নিজের সন্তানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন। একজন ঈশ্বর যদি সরাসরি যোগাযোগ না করেন তাহলে তিনি কেমন পিতা? বাইবেলের ঈশ্বর আগেও সরাসরি যোগাযোগ করতেন এবং এখনও সরাসরি যোগাযোগ করেন। ** ঈশ্বর এখন যোগাযোগ করেন না এটা বাইবেলে লেখা নেই। যদি কেউ বলে যে ঈশ্বর যোগাযোগ করেন না তাহলে তিনি হয়তো অন্য কোন ধর্মের দর্শন দ্বারা অথবা নিজের চিন্তা বাইবেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। আমরা বলতে পারি যে ঈশ্বর এখনও যোগাযোগ করেন কিন্তু আমরা হয়তো নিজে ভুল শিক্ষায়, ভুল পথে বা ভুল চিন্তায় থাকার কারণে ঈশ্বরের কথা বুঝতে পারি না।
৭) ঈশ্বর যদি বিশ্বস্ত ও প্রেমময় হন তাহলে স্বর্গ নিয়ে নিজের সন্তানকে অনিশ্চয়তায় রাখবেন না। পিতা যদি নিজের সন্তানকে ঘরে প্রবেশের জন্য অনিশ্চয়তায় রাখেন, তাহলে তিনি কেমন পিতা? বাইবেলের ঈশ্বর স্বর্গ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রাখেন না। যীশুর মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর সন্তানদের স্বর্গে প্রবেশের নিশ্চয়তা দান করেন। তাই ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে বিনামূল্যে আমরা স্বর্গে প্রবেশ করি। নিজের পরিবারে প্রবেশ করার জন্য কোন যোগ্যতা প্রয়োজন নেই, বাবার দয়া গ্রহণই যথেষ্ট। প্রথমে যীশুর মধ্য দিয়ে আমরা স্বর্গে প্রবেশ করি, এরপর নাগরিক হিসাবে ভাল কাজ করা আমাদের দায়িত্ব। আর ভাল কাজ না করলে এর ফলও ভোগ করতে হবে, তবে এতে তিনি স্বর্গছাড়া করবেন না।
৮) সর্বোচ্চ ভালবাসার কারণে নিজের প্রতিমূর্তি মানুষকে ঈশ্বর তাঁর সন্তান হিসেবে দেখবেন। ঘৃণার দেবতারা মানুষকে শুধু দাস হিসাবে দেখে এবং আইনের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখতে চায়। সর্বোচ্চ ভালবাসার ঈশ্বর এমন নন। বাইবেলের ঈশ্বর মানুষকে নিজের সন্তান হওয়ার অধিকার দেন, এরপরে তিনি চান আমরা যেন সন্তান হয়ে স্বেচ্ছায় পিতা ঈশ্বরের দাসত্ব করি, যীশু যেমন করেছিলেন।
৯) ভালবাসার ঈশ্বর নম্রতায় প্রভু এবং দাস উভয় ভূমিকাতেই কাজ করেন। বাইবেলের ঈশ্বর নিজে প্রভুত্বও দেখিয়েছেন এবং দাসত্বও দেখিয়েছেন। মন্দ ঈশ্বর বা দেবতা শুধু প্রভুত্ব দেখাতে চায়, নিজের ক্ষমতার গর্ব করে বেশি কিন্তু নিজে দাস হতে চায় না। এটা শয়তানের চরিত্র।
১০) সত্য ঈশ্বর মিথ্যার মধ্যে আটকে থাকা সমর্থন করেন না, কারণ তিনি মানুষের মঙ্গল চান। ভন্ড ঈশ্বর মানুষের অমঙ্গল চায়, তাই সে মিথ্যার মধ্যেই মানুষকে আটকে রেখে কষ্ট দিতে চায়। মিথ্যার দেবতা পূর্বপুরুষের ভ্রান্ত বিশ্বাসের মধ্যে মানুষদের আটকে থাকার পরামর্শ দেয়। তারা বলে যে পূর্বপুরুষের বিশ্বাস মিথ্যা হলেও সেখানে আটকে থাকাই ভাল। কিন্তু একজন দেবতা যদি মিথ্যুক হয়, তার সেই কথাটাও মিথ্যা হতে পারে। মিথ্যুক দেবতার কথা বিশ্বাস করব কিভাবে?
১১) সত্য ঈশ্বর এই জগতের বিষয়গুলো দিয়ে ভাল কিছু করতে বলবেন। নকল ঈশ্বর হয় এই জগতের বিষয়গুলো শুধু নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে বলবে, একদম নিরাসক্ত হতে বলবে অথবা সুবিধাবাদী হতে বলবে। বাইবেলের ঈশ্বর এমন নন।
১২) কোন দেবতাকে যদি সৃষ্টি করা হয় তাহলে সে সত্য ঈশ্বর হতে পারে না। যীশুকে কেউ সৃষ্টি করেনি, তিনি আগে থেকেই ছিলেন কিন্তু পৃথিবীতে মানুষ হিসাবে ডেলিভারি নিয়েছিলেন। এই ডেলিভারিকে আমরা জন্ম বলি, কিন্তু এর আগেই তিনি ছিলেন। (ত্রিত্ব ঈশ্বর নিয়ে একটি বই পরে বের করা হবে। ত্রিত্ব ঈশ্বর সম্ভব নয় এটা না বলে বলা যায় যে, ত্রিত্বের বিষয় পুরোপুরি বুঝি না।)
এই কয়েকটি মানদণ্ড ঠিক না থাকলে আমি একজন দেবতাকে সৃষ্টিকর্তা বা সত্য ঈশ্বর হিসেবে মানতে রাজি নই। প্রকৃত ঈশ্বরের মানদণ্ড এই কয়েকটির চেয়েও উঁচু যা আমি বর্ণনা করতে পারব না। তবে অন্তত এই কয়েকটি মানদণ্ড ঠিক থাকলে আমি বলতে পারব যে, এই ঈশ্বর আসলেই ভাল একজন ঈশ্বর। উপরের বারটি মানদণ্ডের মধ্য থেকে মাত্র একটিও যদি একজন দেবতা থেকে বাদ যায়, তাহলে তাকে আদর্শ বলা উচিৎ হবে না। আর যেহেতু ঐ দেবতা আদর্শ হতে পারে না, তাই সে সর্বোচ্চ সৃষ্টিকর্তা নয়।
বাইবেলের ঈশ্বরের চেয়ে জীবন্ত, আদর্শ এবং ন্যায্য ঈশ্বর যদি কেউ দেখাতে পারেন তাহলে আমার মনে হয় ঈশ্বর নিজেই বলতেন, ‘ওই দেবতা আমার চেয়ে ভাল, তোমরা ওকেই মান’। আমাদের ঈশ্বর এমনই আদর্শ। এরকম ঈশ্বরের চেয়ে ভাল কোন ঈশ্বর যদি কেউ দেখাতে পারেন তাহলে কেন আমি সেই ঈশ্বরকে গ্রহণ করব না? আপনি কি আমাকে বাইবেলের ঈশ্বরের চেয়ে ভাল কারও কাছে নিয়ে যেতে পারেন? তাহলে আমি আপনার দেখানো ঈশ্বরকে গ্রহণ করতে রাজি হব এবং সমগ্র বিশ্বে সেই ঈশ্বরকে প্রচার করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হব। আর বাইবেলের ঈশ্বর এতে একমত হবেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
যীশুকে আমার পাপের মুক্তিদাতা হিসাবে গ্রহণ করেছি বলে আমি নিশ্চিত স্বর্গে যাব। স্বর্গে যাওয়ার জন্য আমি ভাল কাজ করি না বরং কৃতজ্ঞ হয়ে মানুষের মঙ্গলের জন্য ভাল কাজ করি, পাপ থেকে দূরে থাকি এবং সুসমাচার শিক্ষা দেই।
আপনি কি যীশুর মধ্য দিয়ে পরিত্রাণ চান? স্বর্গে যেতে চান? তাহলে কি করতে হবে?
প্রেরিত ১৬:৩১- আপনি ও আপনার পরিবার প্রভু যীশুর উপর বিশ্বাস করুন, তাহলে পাপ থেকে উদ্ধার পাবেন।
রোমীয় ১০:৯- যদি তুমি যীশুকে প্রভু বলে মুখে স্বীকার কর এবং অন্তরে বিশ্বাস কর যে, ঈশ্বর তাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করে তুলেছেন তবেই তুমি পাপ থেকে উদ্ধার পাবে।
অর্থাৎ আপনি যদি স্বর্গে যেতে চান তাহলে কোন মানুষের সাহায্য আপনার লাগবে না। আপনার যা করা লাগবে তা হল-
১) অন্তরে বিশ্বাস করুন যে যীশুই সেই ত্রাণকর্তা প্রভু।
২) অন্তরে বিশ্বাস করুন যে যীশু আপনাকে পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য আপনার হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন এবং পুনরুত্থিত হয়েছেন।
৩) ঈশ্বরের সামনে মুখে স্বীকার করুন যে যীশুকে আপনি ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করেছেন।
অন্তরে বিশ্বাস সহকারে যদি এগুলো করে থাকেন, ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে আপনি পরিত্রাণ পেয়ে গেলেন। স্বর্গের ভিসা আপনি পেয়ে গেছেন। ঈশ্বরের দয়াতে স্বর্গের রাস্তা খুবই সরল, ঈশ্বরের দয়ায় বিনামূল্যে স্বর্গের নাগরিক হওয়া যায়, কিন্তু এই জগতে স্বর্গের নাগরিকের মত জীবন যাপন করা সহজ নয়। যীশুর শিষ্য হওয়া সহজ নয়। যীশুর মত স্বর্গের নাগরিক হওয়ার জন্য এখন আপনি আশেপাশের কোন খ্রিষ্টীয় আত্মিক মানুষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতে পারেন।
আমরা কেউ জানি না কখন আমি বা আপনি মারা যাব। তাই যাকে সৃষ্টিকর্তা হিসাবে মানেন, আমার অনুরোধ যে সময় থাকতেই তাকে যাচাই করুন এবং যীশুকে গ্রহণ করে স্বর্গে যাওয়ার সুযোগ গ্রহণ করুন।
শেষ কথাঃ
আপনি কি ভাল কাজ করেছেন বলে মাবাবার সন্তান হয়েছেন? উত্তর হল, “না”। ভাল কাজ বা মন্দ কাজ, যেটাই আপনি করেন না কেন আপনি মাবাবার সন্তান, কারণ আপনার সংগে মাবাবার রক্তের সম্পর্ক আছে। আমরা নিজেদের কাজ দ্বারা সন্তান হইনা বরং রক্তের সম্পর্কের কারণে মাবাবার সন্তান হই। আমাদের ঈশ্বর হচ্ছেন আত্মা ও ভালবাসা, তাই আমরা ভাল কাজ দিয়ে ঈশ্বরের সন্তান হইনা বরং যীশুর মধ্য দিয়ে আত্মিক এবং ভালোবাসার সম্পর্কের কারণে ঈশ্বরের সন্তান হই। আত্মিক সম্পর্কে আমরা ঈশ্বরের সন্তান, আর এইভাবেই আমরা স্বর্গে যাব নিশ্চিত হই। সন্তান হওয়ার জন্য কোন যোগ্যতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু শিষ্য হওয়ার জন্য যোগ্যতা প্রয়োজন আছে। আমরা স্বর্গে যাওয়ার যোগ্য নই কারণ আমরা পাপী, আর যীশু আমাদের পাপের জন্য বলী হিসাবে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। আমরা নিজেদের কাজ দ্বারা স্বর্গে যাই না, কিন্তু যীশু আমাদেরকে স্বর্গে নেওয়ার জন্য যে কাজ করেছেন সেই কাজ দ্বারা আমরা স্বর্গে যাই। এই কারণে পাপ থেকে পরিত্রাণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। তবে এই জগতে পাপের কারণে যে ফলাফল আসে তা যীশু গ্রহণ করবেন না। পাপের ফলাফল হিসাবে পৃথিবীতে যা ঘটে তা আমাদের নিজেদের বহন করতে হয়। নরক থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যে জরিমানা দেওয়া দরকার তা যীশু দিয়েছেন, কিন্তু পাপের কারণে পৃথিবীতে যা হচ্ছে এই ফলাফল থেকে মুক্ত হওয়ার জরিমানা যীশু দেননি। পৃথিবীতে কর্মফল আমাদের ভোগ করতে হবে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং নিজের মঙ্গলের জন্য হলেও পাপ থেকে বিরত থাকা ঈশ্বরের ইচ্ছা।
এখনও সুযোগ আছে– আপনি কি যীশুকে গ্রহণ করেছেন?
আপনি ঈশ্বরকে না চাইলেও ঈশ্বর আপনাকে চান। আপনি নাস্তিক হলেও ঈশ্বর আপনাকে ভালবাসেন। আপনার জন্যও আমি একদিন কিছু নিয়ে আসব বলে আশা করছি। নিজের অহংকার সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়ে যদি সত্য গ্রহণ করতে রাজি থাকেন, আমি বিশ্বাস করি প্রভু যীশু আপনাকেও তাঁর প্রকাশ দিবেন। অহংকারী না হয়ে গোপনে আপনার হৃদয় স্থির করুন, যখন যীশু আপনাকে পথ দেখাবেন তখন বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বা মানসিক যুক্তি দিয়ে অজুহাত তৈরি করবেন না এই সিদ্ধান্ত নিন। হৃদয়ে খোলা হন এবং প্রয়োজনে ২,৩ বার খাঁটি অন্তরে প্রমাণ চান, তিনিই আপনাকে সত্যের দিকে পথ দেখাবেন।
একটি প্রার্থনাঃ
আপনার জন্য আমি প্রার্থনা করতে চাই। আমি প্রার্থনা করি যেন প্রভু যীশু আপনাকে কোন না কোন প্রমাণ দেন এবং প্রকাশ করেন যে তিনিই একমাত্র পথ, এবং এইভাবে তিনি যেন আপনাকে স্বর্গের পথে নিয়ে আসেন।
মনে হতে পারে, এতদিন আমি যা জানলাম যা শিখলাম তা কি ভুল? ভুলকে ভুল বলা ঈশ্বরীয় একটি কাজ, নিজের ভুল স্বীকার করতে জাগতিক মানুষের মধ্যে লজ্জা ও ভয় কাজ করে। যখন ভুল স্বীকার করে সত্য গ্রহণ করতে পারবেন তখনই শুধু মুক্তি পাবেন।
যদি আপনি যীশুকে নিজের মুক্তিদাতা হিসাবে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত হন, তাহলে হৃদয়ে বিশ্বাস নিয়ে নিচের কথা নিজ মুখে বলুন।
যীশু, আমি বিশ্বাস করি তুমি আমাকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে এই জগতে এসেছ। আমি বিশ্বাস করি তুমি আমার পাপের জন্য মৃত্যুবরণ করেছ এবং মৃত্যুকে জয় করে পুনরায় জীবিত হয়েছ। আমি তোমাকে আমার মুক্তিদাতা ও প্রভু হিসাবে গ্রহণ করি। ঈশ্বরের সন্তান হয়ে স্বর্গে প্রবেশ করার সুযোগ দেয়ার জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
ব্যাস হয়ে গেছে। আপনি যদি হৃদয়ে বিশ্বাস করে উপরের কথা বলে থাকেন তাহলে আপনি পরিত্রাণ পেয়ে গেছেন। আপনি এখন আত্মায় ঈশ্বরের সন্তান, তাই এখন মৃত্যুর পরে স্বর্গে যাবেন। পরিত্রাণ কোন আবেগের বিষয় নয়, আপনার মধ্যে কোন আবেগ কাজ করলেও বা আবেগ কাজ না করলেও বিশ্বাসে গ্রহণ করলে আপনি পরিত্রাণ পেয়েছেন। কিন্তু এখন কি করবেন? যখন আপনি প্রস্তুত হবেন, আশেপাশের বিশ্বস্ত কোন পালকের কাছে গিয়ে জলে বাপ্তিস্ম নেন এবং স্বর্গের নাগরিক হিসাবে পাপ মুক্ত জীবন যাপন করেন। ঈশ্বর আপনাকে অনেক ভালবাসেন।
বিশেষ নোটঃ (মূলত বিশ্বাসীদের জন্য)
বাইবেল থেকে বাক্য দেখিয়ে অনেকে আপনাকে বলতে পারে যে স্বর্গে যাওয়ার জন্য শুধু বিশ্বাস যথেষ্ট নয়, স্বর্গে যাওয়ার জন্য আমাদের কাজও করতে হয়। অনেকে বলতে পারে যে শুধু বিশ্বাস করলে হবে না, বাপ্তিস্ম নেয়াও লাগবে। অনেকে বলবে আমরা এই স্বর্গ বা পরিত্রাণ হারাতে পারি। অনেকে বলবে শুধু বিশ্বাসে হবে না, পরিত্রাণের জন্য আইনও পালন করতে হবে। অনেকে বলবে যে যীশুকে শুধু প্রভু বলে ডাকলেই স্বর্গে যাওয়া যাবে না ইত্যাদি।
বাইবেলে কিছু কিছু বাক্য আছে যা পড়লে আপনার আসলেই মনে হতে পারে যে, শুধু বিশ্বাসে যীশুকে গ্রহণ করা পরিত্রাণের জন্য যথেষ্ট নয়। কিন্তু আসলেই কি বাক্য সেটাই প্রকাশ করে?
কবে করতে পারব জানি না, তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই জটিল বিষয়গুলো খুব সাধারণভাবে উপযুক্ত ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করব। আমরা অনেক সময় বাইবেল থেকে পছন্দের অংশ নিয়ে সেটা ঘাওরামি করে ধরে রাখি এবং অপছন্দের পদ বর্জন করার চেষ্টা করি। এই কারণে আমাদের ব্যাখ্যা আংশিক হয়। পছন্দের এবং অপছন্দের এই দুই ধরণের পদ একসাথে করেই আমি ব্যাখ্যা দেব। বাইবেল ব্যাখ্যার সময় আমি যে নীতিমালা অনুসরণ করি তা হল-
১) অবশ্যই ব্যাখ্যাটা বাইবেল সমর্থিত হতে হবে।
২) ব্যাখ্যা অবশ্যই ঈশ্বরের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য অনুসারে হতে হবে।
৩) সবসময় পরিষ্কার পদ ব্যাবহার করে অপরিষ্কার পদ ব্যাখ্যা করতে হবে। উদাহরণঃ “কর্মবিহীন বিশ্বাস মৃত”, এটা একটা অপরিষ্কার পদ, এই পদ কখনও প্রকাশ করেনি যে মৃত বিশ্বাস আমাদের নরকে নিয়ে যায়। পরিষ্কার পদ হল অনুগ্রহে বিশ্বাস দ্বারা পরিত্রাণ আসে, এটা কর্মের ফল নয়। পরিত্রাণ কর্মের ফল নয়, এই পরিষ্কার পদ ব্যাবহার করে আমাদের ব্যাখ্যা করতে হয় যে “কর্মবিহীন বিশ্বাস মৃত।”
অপেক্ষায় থাকুন, যীশুতে বিশ্বাস করুন এবং তাঁর উপর বিশ্বাস করুন। আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমাদের সম্পর্কে কিছু কথাঃ
আমরা এমন একটি দল গঠনের চেষ্টা করছি যারা
১) এই দেশের যুব যুবাদের মধ্যে রুপান্তর ঘটাতে সাহায্য করবে।
২) ৫০ দিনের রুপান্তরকারী বাইবেল স্টাডি প্রশিক্ষণ প্রস্তুতি করছি।
৩) এশিয়া মহাদেশকে কেন্দ্র করে সুসমাচার প্রচার ও শিক্ষা দান করবে।
*** মন্দ আত্মা দূর, কাউন্সেলিং, নিরাময় শিক্ষার পরে আরোগ্যকারি প্রার্থনা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা এখনও কিছু কিছু কাজ করি এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি কাজ করার ইচ্ছা আছে। উপযুক্ত লোকবল কম হওয়ার কারণে এই মূহূর্তে বিশদভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রার্থনার অনুরোধ জানাই যেন আমরা উপযুক্ত লোক খুঁজে পাই, ওদের গঠন করতে পারি এবং সকলে মিলে প্রভুর রাজ্য বিস্তারে সক্রিয় হতে পারি।
আমাদের এই যাত্রায় প্রার্থনা ও অর্থনৈতিকভাবে কেউ দাঁড়াতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন-
simplelearner77@gmail.com
(ব্যস্ততার কারণে যদি উত্তর দিতে দেরী হয় মার্জনা করবেন।)
-