সূচনাঃ
বাইবেলের নির্দেশনা অনুসারে যদি কোন পরিবার গঠিত হয় শুধু তাকেই ঈশ্বরীয় পরিবার বলা যায়। ঈশ্বরীয় পরিবারে ডিভোর্স নিষেধ। একটি পরিবার খ্রিস্টান পরিবার হতে পারে কিন্তু ঈশ্বরীয় পরিবার নাও হতে পারে। ঈশ্বরীয় পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের জন্য বাইবেলে অনেক নির্দেশিকা আছে। এই নির্দেশিকাগুলো পালন করা কঠিন এবং অনেকসময় আন্তরিকভাবে পালনের ইচ্ছাই জাগে না। বিশেষ করে যখন একজন আরেকজনের কণ্ঠ শুনলেই গা জ্বলে উঠে, একজন আরেকজনের মুখ দেখলেই বিরক্তি লাগে তখন ঈশ্বর বললেও তা মানার ইচ্ছা হয় না। সন্তানের মঙ্গলের জন্য হলেও ঈশ্বরের বাধ্য হওয়া উচিৎ, পরিবার রক্ষা করা উচিৎ। এই বিষয়গুলো জানার পরেও কোন লাভ হয়না, যত দিন যায় ততই সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে এবং শেষে ডিভোর্স পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে।
ডিভোর্সের এই সমস্যার শিকড় বের করার জন্যই আমার এই লেখাটা রচিত হল।
ভিত্তিক নীতিমালা ১-
নতুন বিয়ের সময় কি হয় তা একটু লক্ষ্য করি-

নতুন পরিবার যখন হয় তখন ছেলের পরিবার থেকে ছেলে আসে, মেয়ের পরিবার থেকে মেয়ে আসে এবং দুইজন মিলে ঈশ্বরের সাক্ষাতে সম্পূর্ণ নতুন একটি পরিবার গঠিত হয়। এই পরিবার আগের পরিবারের মত হবে না। এটি পুরো ভিন্ন হওয়ার কথা।
আদিপুস্তক – ২ঃ২৪- এই কারণ মনুষ্য আপন পিতা মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং তাহারা একাঙ্গ হইবে।
এটা পাপ শুরু হওয়ার আগের ঘটনা। পুরুষ এবং নারী স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আলাদা হবে এই বিষয়টি ঈশ্বর পাপের আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই মাবাবা থেকে আলাদা হবে। তবে এই বাক্য দেখায়, স্ত্রী আলাদা না হলেও অন্তত পুরুষকে মাবাবা থেকে আলাদা হতে হবে। পুরুষকে আলাদা পরিবার গঠন করতে হবে এবং মাবাবাকে ছেড়ে আসতে হবে। এখানে নিজের চিন্তা এবং সংস্কৃতির চিন্তা ঢুকানো যাবে না। ঈশ্বরের পরিকল্পনা হল পুরুষ মাবাবাকে ছাড়বে এবং স্ত্রীর সংগে একাঙ্গ হবে। (নীতিমালা অনুসারে মেয়েদেরও ছাড়তে হবে, তবে তা সরাসরি এই বাক্যে উল্লেখ নেই।)
স্বামী-স্ত্রী যেহেতু একাঙ্গ, তাই স্বামী যদি বিয়ের সময় বউ নিয়ে আসে, পরে নিজের বাড়িতে স্ত্রীকে প্রাধান্য না দিয়ে মাবাবা এবং ভাইবোনকে প্রাধান্য দেয় তাহলে স্ত্রী কম গুরুত্ব পাবে, তখন স্ত্রী ঠিকমত গঠিত হবে না এবং নতুন পরিবারে সমস্যা হবে। ৫ বছরের বিবাহিত জীবন হলেও সমস্যা হবে ২৫ বছরের বিবাহিত জীবন হলেও সমস্যা হবে, কারণ স্বামী পূর্বের পারিবারিক চিন্তাধারা না ছেড়ে নতুন পরিবারে পূর্বের চিন্তা যুক্ত করতে চাইছে।

স্বামীর জন্যঃ বিয়ের সময় একজন পুরুষ যদি স্ত্রীর পরিবর্তে আগের পরিবারকে বেশি গুরুত্ব দেয়, নিজের মা বাবাই তার কাছে বেশি প্রাধান্য পায় তাহলে সে মানসিকভাবে এখনও নতুন পরিবার শুরু করেনি। আগের পরিবারের শিকড় এখনও যায়নি। এই শিকড় দূর করার সিদ্ধান্ত না নিলে সম্পর্কের মূল সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তখন আগের পরিবারকে খুশি রাখতে গিয়ে ডিভোর্সের চিন্তা আসতে পারে।
স্ত্রীর জন্যঃ স্ত্রী যদি আগের পরিবারের চিন্তা এবং মাবাবাকে ছেড়ে স্বামীকে প্রাধান্য না দেয় তাহলে পরিবারে সমস্যা হবে। কিছু হলেই অভিযোগ শুরু হবে, আমার বাড়িতে এমন এমন হতো আর এখানে আসার পরে আমার স্বামী আমাকে ওই সুবিধাগুলো দেয় না, সে আমার সাথে আগের মত করে না, স্বামী আমাকে আগের মত গুরুত্ব দেয় না। অর্থাৎ খুব সম্ভবত এই স্ত্রী আগের পরিবারের বিষয়গুলো ছাড়তে পারেনি। নতুন পরিবার গঠন করেছেন, আগের পরিবার বাদ দিয়ে স্বামীকে প্রাধান্য দিতে হবে। স্বামীর পরিবারকে প্রাধান্য নয়, নিজের আগের পরিবারকেও প্রাধান্য নয় বরং স্বামীকে প্রাধান্য দিতে হবে। যদি স্বামী এবং স্ত্রী দুইপক্ষই আগের পরিবারকে প্রাধান্য দেয়া বন্ধ করে, তাহলে এখন থেকে সমাধানের বিষয় মাত্র শুরু হবে। আগের শিকড় বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত না নিলে দুইজন মিলে যতই প্রার্থনা করুন না কেন, তেমন কোন লাভ হবে না।

নীতিমালা ১- স্বামী স্ত্রী উভয়কে আগের পরিবার সম্পূর্ণ বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
(বর্জন মানে এই নয় যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বর্জন করবেন, বর্জন মানে বুঝানো হচ্ছে নতুন পরিবারের মঙ্গলের জন্য আগের পরিবারের সমস্ত প্রভাব বর্জন করার মনোভাব অর্জন করতে হবে। যদি প্রয়োজন হয়, শুধু সেই ক্ষেত্রে পুরোপুরি বর্জন করার সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।)
** এই নীতি না মানলে সমাধান পাওয়ার চিন্তা দয়া করে করবেন না। আপনি নতুন পরিবার গড়বেন অথচ আগের পরিবারকে সবসময় টানবেন, আগের পরিবারকে খুশি রাখার চেষ্টা করবেন, এটা নতুন শান্তিময় পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা। কারণ ঈশ্বরের ডিজাইনের বাইরে আমরা চিন্তা করছি।
ভিত্তিক নীতিমালা ২–
প্রশ্ন জাগতে পারে- অব্রাহামতো নিজের সন্তানের জন্য কনে নিয়ে গিয়েছিল, তাহলে ঘরের ছেলেকে মাবাবা ছেড়ে যেতে হবে কেন? অব্রাহামের সন্তান ইসহাকের বিয়ের ঘটনা যদি পড়েন (আদি ২৪), সেখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় দেখতে পাবেন-
ক) অব্রাহাম নিজের এবং সন্তানের আহ্বান সম্পর্কে অবগত ছিলেন।
খ) অব্রাহাম নিজে ঈশ্বরভক্ত ছিলেন এবং ঈশ্বরের জন্য সব ছাড়তে রাজি ছিলেন।
গ) তিনি শ্বশুর হিসাবে ঈশ্বরীয় লোক ছিলেন।
ঘ) অব্রাহামের দাসও ঈশ্বরের রব শুনতেন। ঘটক হিসাবে ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক আছে এমন লোককে অব্রাহাম নির্বাচন করেছিলেন।
ঙ) ঈশ্বর থেকে নিশ্চয়তা পাওয়ার পরে এই বউ আনার বিষয়টি এগিয়েছিল।
চ) এই বউ আনার বিষয়ে ঈশ্বর, অব্রাহাম, অব্রাহামের দাস, কনে, কনের পরিবার অর্থাৎ সবার মত ছিল।
তাই দেখা যাচ্ছে, শ্বশুরবাড়ির লোকের সাথে যদি ঈশ্বরের ভাল সম্পর্ক থাকে, তারা নিজেদের আহ্বান জানে, যদি ঈশ্বরের বাধ্য হয়, ঈশ্বরের বাক্য জানে, ঈশ্বরীয় লোক হয় তাহলে কনের শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার বিষয়টা ঈশ্বর ভাল হিসেবে নিতেই পারেন। এখানে আমি বলতে পারি-
ক) যদি ছেলের বাড়ির লোক প্রকৃত ধার্মিক হয় এবং ঈশ্বরের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখে, তাহলে ছেলের বাড়িতে কনে নিয়ে নিয়ে গেলে কোন সমস্যা নেই। তবে ছেলের বাড়ির লোকেরা ঈশ্বরের দিকে নজর না দিয়ে যদি ধনসম্পদ এবং স্ট্যাটাসের দিকে বেশি নজর দেয় তাহলে সেখানে কনে নিয়ে যাওয়া উচিৎ নয়।
খ) যদি মেয়ের বাড়ির লোক প্রকৃত ধার্মিক হয় এবং ঈশ্বরের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখে, তাহলে মেয়ের বাড়িতে ছেলে নিয়ে নিয়ে গেলে কোন সমস্যা নেই। তবে মেয়ের বাড়ির লোকেরা ঈশ্বরের দিকে নজর না দিয়ে যদি ধনসম্পদ এবং স্ট্যাটাসের দিকে বেশি নজর দেয় তাহলে সেখানে ছেলে নিয়ে যাওয়া উচিৎ নয়।
গ) যদি বর এবং কনে উভয়ের বাড়ির লোকেরা ঈশ্বরীয় না হন তাহলে স্বাধীনভাবে আলাদা পরিবার করা ভাল, এক্ষেত্রে কোন পক্ষই বরকনেকে দাবী করতে পারবে না, স্বামী স্ত্রী দুইজন মিলে আলাদা ঈশ্বরীয় পরিবার গঠন করার স্বাধীনতা পাবে।
ঘ) যদি বর এবং কনে উভয় বাড়ির লোক ঈশ্বরীয় হয়ে থাকেন তাহলে কার বাড়িতে কে যাচ্ছে এটা নিয়ে কোন সমস্যাই হবে না। শান্তিময় আলোচনা এবং প্রার্থনার মধ্য দিয়ে অব্রাহামের দাসের মত চিহ্ন দেখে বা অন্য কোন ভাল উপায়ে ওরা এর সমাধান করতে পারবেন। এতে কোন সমস্যা হবে না কারণ ওরা মণ্ডলীকে, পরিবারকে, কালচারকে অথবা স্ট্যাটাসকে কেন্দ্রে রাখবেন না কিন্তু ঈশ্বরকে কেন্দ্রে রাখবেন।
আপনার নিজের বাড়ির লোকজন কেমন?
– ওদের কি সত্য ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক আছে?
– ওরা কি সত্য ঈশ্বরের বাধ্য?
– ওরা কি ঈশ্বরের চরিত্র ধারণ করে নাকি শয়তানের চরিত্র ধারণ করে?
– ওরা কি ঈশ্বরের বাক্য ভাল জানে?
– ওরা কি ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক করার জন্য আপনাকে উৎসাহিত করে নাকি জগতের সাথে সম্পর্ক করার জন্য উৎসাহিত করে?
– ওরা কি নিজের কর্মচারীদের সাথে ঈশ্বরের সম্পর্ক করিয়ে দেয় নাকি জগতের সাথে সম্পর্ক করিয়ে দেয়?
আপনার মাবাবার যদি ঈশ্বরীয় বিষয়ে আগ্রহ না থাকে, তাহলে জীবনসঙ্গীকে নিজের বাড়িতে না উঠালে ভাল। একইভাবে আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকের যদি ঈশ্বরীয় বিষয়ে আগ্রহ না থাকে তাহলে আপনিও শ্বশুর বাড়িতে না উঠলে ভাল। আপনার নতুন পরিবারে সমস্যা হবে। আপনি হয়তো নিজের লোকদের অথবা শ্বশুরবাড়ির সম্মান রক্ষার চেষ্টা করবেন, ওদের মন জুগানোর চেষ্টা করে নিজের সঙ্গীকে কম গুরুত্ব দিবেন এবং পরিবার গঠনে ঈশ্বরীয় আশির্বাদ হারাবেন। তাই-
বাইবেলীয় নীতিমালা ২- পরিবারে ঈশ্বরীয় শ্বশুর/বাবা এবং শাশুড়ি/মা থাকলে শুধু সেই পরিবারেই কনে বা বর নিয়ে আসুন। যদি ঈশ্বরীয় অভিভাবক দ্বারা পরিবার চালিত না হয় তাহলে সেই পরিবারে বর বা কনে আনার চিন্তা বাদ দিয়ে স্বাধীন বিয়ে করুন। এটা নতুন পরিবারকে শূন্য থেকে ঈশ্বরীয় হতে সাহায্য করবে।
** এই নীতিমালা না মানলে আপনার নিজের মাবাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের থেকে মন্দ প্রভাব নিজের পরিবারে নিয়ে আসবেন এবং নতুন বিবাহিত জীবনে অশান্তি আসবে। দয়া করে প্রার্থনা এবং উপবাসের আগে সিদ্ধান্ত নিন যে এই দুইটি নীতিমালা মানবেন। এরপরে সমাধানের পথে আসার জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ।
** বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আগের পরিবার ছেড়ে আসা মানে এই নয় যে ওদের সাথে আর সম্পর্ক থাকবে না। নতুন স্বামী-স্ত্রীর চোখে যদি মা-বাবা, শ্বশুর শাশুড়ি শ্রদ্ধার যোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তাঁদের থেকে ভাল পরামর্শ নেয়া যায়। অবশ্যই ঘুরতে যাওয়া যায়। তবে সতর্ক থাকতে হয় নতুন পরিবার যেন আগের পরিবার দ্বারা বেশি প্রভাবিত না হয়ে ঈশ্বর দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়।
আপনি বিবাহিত হয়ে থাকলে ইতিমধ্যে কনে নিয়ে আসা অথবা বর নিয়ে আসা সম্ভবত হয়ে গেছে। যেহেতু এটা আর ফেরানো সম্ভব নয় তাই স্বামী স্ত্রী উভয়ের সম্মতিতে আলাদা হয়ে ঈশ্বরীয় পথে থাকাটাই এখন উত্তম।
ভিত্তিক নীতিমালা ৩–
বিবাহিত দম্পত্তির ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে প্রায় সবাই একমত হয়। সেটি হল, স্বামী এবং স্ত্রীর একে অন্যের পাশে দাঁড়ানো দরকার। স্বামী যত ভুলই করুক না কেন স্ত্রী যেন তার পাশে থাকে, স্ত্রী যত ভুলই করুন না কেন স্বামী যেন তার পাশে থাকে। আমি স্বীকার করি, প্রকৃতপক্ষেই স্বামীর পাশে স্ত্রীর এবং স্ত্রীর পাশে স্বামীর দাঁড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু কোন ভিত্তির উপরে সে পাশে থাকবে?
| স্বামীরা এই অংশ পড়বেন | স্ত্রীরা এই অংশ পড়বেন |
| আপনি যদি স্বামী হন, আপনি অবশ্যই চান যে স্ত্রী আপনার সাথে থাকুক। আপনার মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ালেও যদি নিজের স্ত্রী পাশে দাড়ায় তাহলে এটা কত না ভাল লাগার একটি বিষয় হবে। পৃথিবীর সবাই আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ালেও একাঙ্গ হিসাবে স্ত্রীর উচিৎ হবে আপনার পাশে দাঁড়ানোর। কিন্তু আপনি কি তাকে সাহায্য করছেন যেন সে আপনার পাশে থাকতে পারে? আপনি কি এমন মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছেন যে কারণে আপনার স্ত্রী আপনার পাশে থাকতে সদা প্রস্তুত? আপনার চরিত্র কেমন? ক) আপনি কি নেশাগ্রস্থ? মাতাল হন? খ) আপনি কি চুরি করেন ও মিথ্যা বলেন? গ) আপনি কি অকারণে রাগ দেখান? ঘ) আপনি কি নিজের ভুলগুলো এড়িয়ে যান? দেখেন না? ঙ) আপনি কি বাইবেল অনুসারে নিজের ইচ্ছাকে এবং চিন্তাকে পরীক্ষা করে দেখেন? চ) আপনি কি নিজের ভুল বুঝার পরে ক্ষমা চান? সংশোধিত হন? ছ) আপনি কি ব্যাভিচার করেন? নিজে ভাল হওয়ার চেষ্টা না করে যদি দাবী করেন, আমার স্ত্রীর অবশ্যই পাশে থাকতে হবে, যদি না থাকে তাকে মার খেতে হবে, জোর করে শাসন করতে হবে। ভরণপোষণ দেয়া বন্ধ করে দিতে হবে। এমন চিন্তায় থাকলে আপনি শয়তানের পথে হাটছেন। | আপনি যদি স্ত্রী হন, আপনি অবশ্যই চান যে স্বামী আপনার সাথে থাকুক। আপনার মা-বাবা এবং শ্বশুর-শাশুড়ি আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ালেও যদি নিজের স্বামী পাশে দাড়ায় তাহলে এটা কত না ভাল লাগার একটি বিষয় হবে। পৃথিবীর সবাই আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ালেও একাঙ্গ হিসাবে স্বামীর উচিৎ হবে আপনার পাশে দাঁড়ানোর। কিন্তু আপনি কি তাকে সাহায্য করছেন যেন সে আপনার পাশে থাকতে পারে? আপনি কি এমন মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলছেন যে কারণে আপনার স্বামী আপনার পাশে থাকতে সদা প্রস্তুত? আপনার চরিত্র কেমন? ক) আপনি কি নেশাগ্রস্থ? খ) আপনি কি চুরি করেন ও মিথ্যা বলেন? গ) আপনি কি অকারণে রাগ দেখান? ঘ) আপনি কি নিজের ভুলগুলো এড়িয়ে যান? দেখেন না? ঙ) আপনি কি বাইবেল অনুসারে নিজের ইচ্ছাকে এবং চিন্তাকে পরীক্ষা করে দেখেন? চ) আপনি কি নিজের ভুল বুঝার পরে ক্ষমা চান? সংশোধিত হন? ছ) আপনি কি ব্যাভিচার করেন? নিজে ভাল হওয়ার চেষ্টা না করে যদি দাবী করেন, আমার স্বামীর অবশ্যই পাশে থাকতে হবে, যদি না থাকে তাকে মার খেতে হবে, পুলিশে দিতে হবে, ডিভোর্স দিতে হবে। ভরণপোষণ জোর করে আদায় করতে হবে। এমন চিন্তায় থাকলে আপনি শয়তানের পথে হাটছেন। |
বাইবেলকে ভিত্তি রেখে একটা পরীক্ষা করে দেখা যাক।
ভালোবাসা দেখতে কেমন?
বর্তমান জগতে একেকজন মানুষ ভালবাসাকে একেক ভাবে দেখে। উদাহরণ-
ক) যে নিয়মিত খোঁজ নেয়না, তার মধ্যে ভালবাসা নেই। সে যদি আমাকে ভালবাসত তাহলে আমি তাকে ফেইসবুকে ব্লক করার পরেও আমার খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করত।
(প্রশ্ন হল- আপনি কি নিজেকে ওর জন্য আরও সহজ করেছেন নাকি আপনার সাথে থাকলে ওর শক্তি আরও কমে যাচ্ছে?)
খ) সে আমার জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকি মনে রাখে না, সে আমাকে সময় দেয় না, তাই সে আমাকে ভালবাসতেই পারে না। (প্রশ্ন হল- আপনি কি নিজেকে এমন ঈশ্বরীয় মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছেন কিনা, যার জন্য সময় দিলে নিজেকে ধন্য মনে হয়?)
গ) আমি সম্পর্ক ঠিক করার জন্য কত প্রার্থনা করছি, কত চেষ্টা করছি কিন্তু মনে হচ্ছে অপর পক্ষের কোন গরজ নেই। মনে হচ্ছে সব চেষ্টা যেন শুধু আমিই করছি। সে আমাকে ভালবাসে না।
(প্রশ্ন হল- আপনি কি বাইবেলীয়ভাবে নিজের চিন্তা ঠিক রেখে চেষ্টা করছেন নাকি নিজের ইচ্ছামত চেষ্টা করছেন?)
ঘ) সে আমার চিন্তার কোন গুরুত্বই দেয় না, আমি যে জিনিসটা চাই সে কখনও আমাকে দেয় না। তাই বুঝতে পারি সে কখনও আমাকে ভালবাসেনি।
(প্রশ্ন হল- আপনি কি আসলেই ভাল জিনিস এবং উপযুক্তভাবে সেই জিনিস চেয়েছেন? এর পরে প্রশ্ন হল- আপনার সঙ্গীর কি সেটা দেয়ার সামর্থ বা দক্ষতা আছে নাকি আপনি এই জিনিস চেয়ে ওর উপর চাপের উপর চাপ সৃষ্টি করছেন?)
ইত্যাদি। আপনার কাছে ভালবাসা দেখতে কেমন? এখন দেখি বাইবেলে ভালবাসার প্রকাশ কেমন?
বাইবেলে ঈশ্বরের ভালবাসা আসলে দেখতে কেমন?
ক) ঈশ্বর এতই ভালবাসেন যে মানুষ সম্পূর্ণভাবে ভুল পথে গেলেও তিনি মন ফিরানোর সুযোগ দেন, ঈশ্বর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। যীশুর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে তিনি অনন্ত জীবনের প্রতিজ্ঞা করেন।
খ) ঈশ্বর এতই ভালবাসেন যে মানুষের ইচ্ছামত তিনি করেন না, মানুষের জন্য যা মঙ্গল তাই তিনি করেন, যদিও ঈশ্বর যা করেন তার অনেক কিছু মানুষ পছন্দ করে না।
গ) ঈশ্বর এতই ভালবাসেন যে মানুষ পাপ করলে এই কাজের বিরুদ্ধে তিনি কষ্টের ব্যবস্থা করেন।
ঘ) ঈশ্বর এতই ভালবাসেন যে মানুষের মঙ্গলের জন্য তাদের উপরে বিচার নিয়ে আসেন, তিনি মানুষের মণ্ডলী ছেড়ে চলে যান যখন মানুষ আর তাঁকে চায় না। ভালবাসার কারণে ঈশ্বর মানুষকে লজ্জাও দিতে পারেন, অসুস্থতার মধ্যেও রেখে দিতে পারেন।
ঙ) ঈশ্বর মানুষকে এতই ভালবাসেন যে নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়েছেন কিন্তু অন্যায় পথে যাওয়ার ফলাফলও রেখেছেন।
এখানে বাইবেলীয় ভালবাসার সারাংশ হল- ঈশ্বরের ভালবাসা এমন যে তা আমাদের মঙ্গলের জন্য অনেক সময় কষ্টকর বিষয় নিয়ে আসে, আবার অনেক সময় আরামের বিষয় নিয়ে আসে। আমি যদি বলি, আমার মনমত না হলে সেখানে ভালবাসা নেই তাহলে এই চিন্তা ভুল বলে স্বীকার করতে হয়।
ঈশ্বর বুঝান, আমাদের মনমত না হলেও তাতে ঈশ্বরের ভালবাসা থাকতে পারে। ভালবাসা সম্পর্কে আমাদের নিজের ব্যাক্তিগত চিন্তা বাদ দিয়ে বাইবেলীয় চিন্তা গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে ভালবাসার প্রকাশ যদি বাইবেলীয় না হয়ে থাকে, সেই ভালবাসাকে ঈশ্বরীয় ভালবাসা বলা যাবে না এটা আমি স্বীকার করি।
উদাহরণঃ ভালবাসা প্রকাশে যদি মিথ্যা, চুরি, ব্যাভিচার, অযৌক্তিক শাসন, তুচ্ছ করে কথাবার্তা বলা হয় এগুলো ঈশ্বরীয় ভালবাসার প্রকাশ নয়। আপনার সঙ্গী যদি এরকম শুরু করে তাহলে অবশ্যই আপনার দোষ কম, কিন্তু হয়তো আপনিই এমন কিছু করেন যে কারণে সঙ্গী এগুলো করতে বাধ্য হয়। তাই প্রথমে নিজের চরিত্রকে বাইবেল অনুসারে পরীক্ষা করে দেখলে ভাল। আপনি যদি মুখে বলেন যে ভালবাসি, কিন্তু অযৌক্তিকভাবে সঙ্গীকে তুচ্ছ করেন, মিথ্যা ও অনৈতিকতার আশ্রয় নেন তাহলে আমি বলব বাইবেলীয়ভাবে আপনি ভালবাসেন না, তাই সম্পর্কের সমাধান হবে না।
নীতিমালা ৩- বাইবেলীয় ঈশ্বরের আদর্শে নিজের চিন্তা ও চরিত্র পর্যবেক্ষন করুন, সংশোধন করুন যেন আপনার মধ্য দিয়ে সমস্যা বৃদ্ধি না পায়।
আপনি যদি নিজের চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করতে পছন্দ না করেন তাহলে এই নীতি মানা আপনার জন্য কষ্টের হবে। যদি নীতি ৩ ঠিকমত পালন করেন, আপনার সঙ্গী আপনার পাশে থাকার মনোবল পাবে। যদি এটা পালন না করেন, আপনি নিজেই হয়তো ওকে ঠেলে দূরে সরাবেন যেন সে আপনার সাথে না থাকে। আপনার মিথ্যা, চুরি, অনৈতিকতা বা বদমেজাজের কারণে যদি সঙ্গী পাশে না দাড়ায় অনুগ্রহ করে ওকে দোষারোপ করবেন না, এখানে দোষ আপনার কারণ আপনি ঈশ্বরীয়ভাবে সংশোধিত হতে রাজি নন।
** এই তিনটি নীতিমালা মেনে আপনি যদি শ্বশুরবাড়ীতে যেতে পারেন, অথবা সঙ্গীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন, তাহলে ভাল ফলাফল দেখতে পাবেন বলেই বিশ্বাস করি।
ভিত্তিক নীতিমালা ৪–
নীতি ১ এবং ২ অনুসরণ করে আপনি আগের পরিবার এবং শ্বশুরবাড়ির প্রভাব মুক্ত হলেন, নীতি ৩ অনুসরণ করে শয়তানের প্রভাব মুক্ত হলেন। এখন আপনি নীতি ৪ এ যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। উপরের তিনটি নীতি না মানলে অনুগ্রহ করে করে নীতি ৪ অনুসরণ করবেন না। এটা আমার অনুরোধ। কারণ ১,২,৩ নং নীতি পালন না করেই যদি ৪ নং নীতিতে আসি তাহলে তা ঈশ্বরীয় চরিত্রের মধ্যে পরবে না। ঈশ্বরীয় নীতি অনুসারে আগে নিজের দোষ দেখতে হয় পরে অন্যের দোষ।
আপনি উপরের তিনটি ধাপ পার হয়ে এসেছেন মানেই এখন ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক ভাল হওয়ার কথা। ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক ভাল করে, অর্থাৎ আত্মিক মানুষ হয়ে এখন অন্যের দোষ বুঝতে পারবেন এবং নিরপেক্ষ সমাধানে আগাতে পারবেন। অন্যথায় আপনার সম্পর্ক ভাল হবে আশা করবেন না।
মথি ৭ঃ৫- হে কপটি, আগে আপনার চক্ষু হইতে কড়িকাঠ বাহির করিয়া ফেল, আর তখন তোমার ভ্রাতার চক্ষু হইতে কুটাগাছটা বাহির করিবার নিমিত্ত স্পষ্ট দেখিতে পাইবে।
** প্রথমে নিজের দোষ দেখা, অর্থাৎ নীতি ৩ পালন করতে হবে।
গালা ৬ঃ১- ভ্রাতৃগণ, যদি কেহ কোন অপরাধে ধরাও পড়ে, তবে আত্মিক যে তোমরা, তোমরা সেই প্রকার ব্যক্তিকে মৃদুতার আত্মায় সুস্থ কর, আপনাকে দেখ, পাছে তুমিও পরীক্ষায় পড়।
** অন্যকে সুস্থ করার আগে নিজের আত্মিক হতে হবে। ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক না করে আপনি আত্মিক হতে পারবেন না, তাই ঈশ্বরের সাথে সম্পর্ক ঠিক করুন, ক্ষমা করুন, সৎ হন, নম্র হন। এরপরে অন্যকে ঠিক করার পদক্ষেপ নিন।
| স্বামীরা পড়বেন | স্ত্রীরা পড়বেন |
| ক) আপনার স্ত্রী কি এমন কিছু করে যা বাইবেলীয় নয়? তালিকা করুন- চুরি, মিথ্যা … খ) সে কি অন্যদের সাথে এগুলো করে নাকি শুধু আপনার সাথে করে? গ) আপনি নিজে পরিবর্তিত হয়েছেন? পরিবর্তিত হওয়ার পরেও কি তিনি এগুলো করছেন? ঘ) আপনার স্ত্রী নাস্তিক নাকি ছোট থেকেই যীশুকে গ্রহণ করেছেন? ঙ) তিনি কি ছোটবেলায় মানসিকভাবে কোন আঘাত পেয়েছেন? চ) তিনি কি খোলাখুলিভাবে আপনাকে সব বলতে পারেন? ছ) নিজের গোপন কথা বলার পরে আপনি স্ত্রীকে কি চোখে দেখেন? ** ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা করে ভালবেসে, নম্রভাবে নিজের দোষ স্বীকার করুন এবং স্ত্রীর মঙ্গলের জন্য ওর সমস্যাও ধরিয়ে দিন। তবে সে যখন শান্ত অবস্থায় থাকে তখন ধরিয়ে দিবেন, অস্থির সময় সমস্যার কথা বলবেন না। দোষারোপের মনোভাব নিয়ে বলবেন না। | ক) আপনার স্বামী কি এমন কিছু করে যা বাইবেলীয় নয়? তালিকা করুন- চুরি, মিথ্যা … খ) সে কি অন্যদের সাথে এগুলো করে নাকি শুধু আপনার সাথে করে? গ) আপনি নিজে পরিবর্তিত হয়েছেন? পরিবর্তিত হওয়ার পরেও কি তিনি এগুলো করছেন? ঘ) আপনার স্বামী নাস্তিক নাকি ছোট থেকেই যীশুকে গ্রহণ করেছেন? ঙ) তিনি কি ছোটবেলায় মানসিকভাবে কোন আঘাত পেয়েছেন? চ) তিনি কি খোলাখুলিভাবে আপনাকে সব বলতে পারেন? ছ) নিজের গোপন কথা বলার পরে আপনি স্বামীকে কি চোখে দেখেন? ** ইত্যাদি সবকিছু বিবেচনা করে ভালবেসে, নম্রভাবে নিজের দোষ স্বীকার করুন এবং স্বামীর মঙ্গলের জন্য ওর সমস্যাও ধরিয়ে দিন। তবে সে যখন শান্ত অবস্থায় থাকে তখন ধরিয়ে দিবেন, অস্থির সময় সমস্যার কথা বলবেন না। দোষারোপের মনোভাব নিয়ে বলবেন না। |
নীতিমালা ৪- সঙ্গীর মঙ্গলের জন্য ভালোবেসে, নম্রতায় উপযুক্ত সময়ে এবং উপযুক্তভাবে ওর সমস্যা দেখিয়ে দিন যেন সে সংশোধিত হতে পারে।
মনে রাখবেন-
কাউন্সেলিং শুধু তখনই সম্ভব যখন স্বামী-স্ত্রী দুই পক্ষ সমাধান চায় এবং নিজেদেরকে সংশোধন করতে রাজি থাকে। এক পক্ষ যদি মিথ্যাকে ভালবেসে আকড়ে ধরে রাখতে চায় এবং পরিষ্কার যোগাযোগ করতে না চায়, তখন কাউন্সেলিং করে সম্পর্কের সমাধান সম্ভব হয় না। তখন শেষ পর্যায়ে যেতে হয় এবং ডিভোর্স ছাড়া উপায় থাকে না। ঈশ্বর ডিভোর্স চান এরকম নয়, কিন্তু মানুষ চায়। বিশেষ করে যে মানুষ সম্পর্কের সমাধান চায় না তার কারণেই ডিভোর্সটা বেশি হয়।
ডিভোর্স হল- যে সমাধান চায় না, সেই লোকের কাছ থেকে শান্তিময় মানুষের উদ্ধার। ডিভোর্স ঈশ্বরীয় কোন সমাধান নয়, ঈশ্বর এটা অনুমোদন করেন যেন একজন ভাল লোক অন্তত মন্দ বা শয়তান লোক থেকে উদ্ধার পায়। ঈশ্বরীয় দৃষ্টিতে ডিভোর্স হল অশান্তিময় লোকের শাস্তি এবং শান্তিময় লোকের উদ্ধার। কতিপয় মানুষ এই ডিভোর্সকে নিজের স্বার্থে ব্যাবহার করার চেষ্টা করে এবং নির্দোষ মানুষকে অত্যাচার করে। আপনি যদি ঈশ্বরীয় নেতা বা ঈশ্বরীয় লোক হয়ে থাকেন অনুগ্রহ করে ডিভোর্সের আইন ব্যাবহার করে ভাল মানুষদের প্রতি অন্যায় করবেন না।
শেষ কথাঃ
আপনার জন্য ঈশ্বরের আকাংখা হলঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন ডিভোর্স না হোক বরং শয়তান, মন্দতা ও মিথ্যা থেকে আপনাদের উভয়ের ডিভোর্স হোক। যদি আপনি ও আপনার সঙ্গী মিথ্যাকে ডিভোর্স দেন তাহলে সংসার অবশ্যই অবশ্যই টিকে থাকবে। একজনও যদি মিথ্যাকে ধরে রাখতে চান, সংসার টিকে থাকলেও তা ধ্বংস নিয়ে আসবে যা ঈশ্বর চান না।
সংযুক্তিঃ
ডিভোর্স রোধের বিষয়টি খুব আংশিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। এখানে অনেক বিষয় জড়িত আছে। যে সমস্ত কারণে দাম্পত্ব জীবনে আরও সমস্যা হতে পারে সেগুলো হল-
ক) আত্মিক কারণে (মন্দ শক্তির প্রভাব, মন্দ শক্তিকে আহ্বান, মন্দকে পছন্দ করা ইত্যাদি)।
খ) মানসিক কারণ। (পারিপার্শিক অবস্থা, সন্তান, সামাজিক অবস্থান, মানসিক উন্নতিতে অনাগ্রহ ইত্যাদি।)
গ) শারীরিক কারণ।
(অর্থনৈতিক বিষয়, চাকরি, কর্মস্থান, সন্তান, পড়াশোনা, চাহিদা, শখ, ছোটবেলার আঘাত, একে অন্যকে না বুঝা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে মনোমালিন্য হতে পারে ও ডিভোর্সের চিন্তা আসতে পারে। যদি নম্রতায় আগানো যায় তাহলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।)
একেক সমস্যা সমাধানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন পদক্ষেপ প্রয়োজন। শুধু আত্মিক কারণে যদি আপনাদের সমস্যা হয়ে থাকে এবং আপনারা উভয়ে সমস্ত আত্মিক মন্দতা দূর করতে রাজি থাকেন তাহলে
ক) নিজেদের সমস্ত পাপ একে অন্যের কাছে শেয়ার করুন(একটাও গোপন করবেন না),
খ) ঈশ্বরের কাছে এবং একে অন্যের কাছে ক্ষমা চান।
গ) অনুতপ্ত হয়ে মন্দ পথ থেকে ফিরে আসুন। যীশুর নামে সেই মন্দ শক্তিকে ধমক দিন, পরিবারকে যীশুর রক্তের অধীনে রাখুন।
ঘ) অনবরত ঈশ্বরীয় পথে থাকুন, সমাধান হয়ে যাবে। অন্য কারও সাহায্যের প্রয়োজন হবে না। তবে দম্পত্তির মধ্যে একজন যদি আন্তরিকভাবে রাজি না থাকেন, তাহলে এটা সম্ভব হবে না। দুইজনের আকাংখা থাকতে হবে পাপ থেকে ফেরার।
যদি মানসিক বা শারীরিক কারণে সমস্যা হয়ে থাকে, দাম্পত্য কাউন্সেলিং এ ঈশ্বরীয় হৃদয় আছে এবং অভিজ্ঞ, এমন কারও সাহায্য নিলে আপনারা ভাল করবেন।
বাইবেল অনুসারে স্বামী স্ত্রীর কি কি করণীয় ও করণীয় নয় সেগুলো বিস্তারিত আলোচনা ভবিষ্যতে করার ইচ্ছা থাকল। সেই পর্যন্ত যাওয়ার আগে উপরের ৪টি নীতি পালন করতে থাকুন আপনাদের জীবনে মঙ্গল আসবে বলেই বিশ্বাস করি।
সবাইকে ধন্যবাদ।
সম্পর্কের বিষয়ে একটি বই পাওয়া যাচ্ছে যা বিবাহিত বা অবিবাহিত যে কোন লোকের সম্পর্কে সাহায্যকারী হতে পারে, আপনি যদি সাভার স্ট্যান্ড এলাকার আশেপাশের লোক হয়ে থাকেন তাহলে সরাসরি এই বইটি সংগ্রহ করতে পারেন। মূল্য ৫০ টাকা + সার্ভিস চার্জ।
